মানবদেহ কখনো কখনো যন্ত্রের মত আচরণ করে কেন ?

যন্ত্রের মত মানবদেহও অনেকগুলো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশ বা তরঙ্গ নিয়ে গঠিত ; যার একটির অভাবে বা বিকল হয়ে যাওয়া সম্পূর্ণ দেহের কর্মকাণ্ড বিঘ্নত হয় । যন্ত্রের প্রত্যেকটি অংশ যেমনিভাবে বিশেষ কাজ সম্পন্ন করে, তেমনি ভাবে মানবদেহের প্রত্যেকটি অঙ্গ আলাদা আলাদা কাজে নিয়োজিত ।

মানবদেহের প্রত্যেকটির অঙ্গ একে অন্যের সাথে আন্তসম্পর্কিত । প্রত্যেকটি অঙ্গ নিজস্ব গতিতে চলে, কিন্তু সবগুলো কাজই সুনির্দিষ্ট এবং এদের মধ্যে পূর্বনির্ধারিত সম্পর্ক রয়েছে । একারণেই মানবদেহ কখনো কখনো যন্ত্রের মত আচরণ করে বলে ধরে নেওয়া হয় ।

জীবজগৎ ও ভৌতজগৎ কি সম্পূর্ণ ভিন্ন নিয়মে চলে ?

জীববিজ্ঞান হল জীবজগৎ অধ্যায়নের বিজ্ঞান । কিভাবে উদ্ভিদ ও প্রাণী খাদ্য আহরণ করে, যোগাযোগ রক্ষা করে, পরিবেশ সম্পর্কে উপলব্ধি লাভ করে এবং বংশবৃদ্ধি করে এ বিষয়গুলো জীববিজ্ঞানে বর্ণনা করা হয় । অন্যদিকে প্রকৃতির যেসব গাণিতিক নিয়ম মেনে চলে সেগুলো হলো পদার্থ বিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয় । দীর্ঘদিন একটি ধারণা বিজ্ঞানীরা পোষণ করে এসেছেন যে জীব জগতের নিয়ম ও ভৌত জগতের নিয়ম আলাদা । কিন্তু ভৌতজগৎ ও জীববিজ্ঞান অগ্রগতির ভেতর দিয়ে এই দুই আপাতভিন্ন শৃঙ্খলা মধ্যে গভীর মিল পাওয়া যায় ।

The biosphere and the physical world
The biosphere and the physical world. মানবদেহ

জীব পদার্থবিজ্ঞানের সূচনা কিভাবে হল ?

প্রাণীদেহকে অনেক দিক থেকে যন্ত্রের সঙ্গে তুলনা করা যায় এবং প্রাণীদেহকে অনেক আচরণকে ভৌত নিয়ম দ্বারা ব্যাখ্যা করা সম্ভব । বস্তুত পদার্থবিজ্ঞানের নিয়মগুলো সার্বজনীন । ফলে শুধু জড়জগত নয়, প্রাণীজগতকেও পদার্থবিজ্ঞানের নিয়মে অনেক ক্ষেত্রে ব্যাখ্যা করা সম্ভব । এই ধারণা হতেই জীবপদার্থবিজ্ঞানের সূচনা হয়েছে ।

পদার্থবিজ্ঞানের জগদীশচন্দ্র বসুর অবদান

Jagdish Chandra Bose
Jagdish Chandra Bose

গবেষণাগারে জগদীশচন্দ্র বসু কিভাবে দূরবর্তী স্থানে তারের সাহায্য ছাড়া কোন রেডিও সংকেত পাঠানো যায় এ বিষয়ে বিস্তর গবেষণা করেন এবং সফল হন । ১৮৯৫ সালে তিনি ইতিহাসে প্রথমবারের মত দূরবর্তী স্থানে বিনা তারে রেডিও সংকেত প্রেরণ করে জনসমক্ষে দেখান । মাইক্রোওয়েভ গবেষণার ক্ষেত্রে তার উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে।

তিনিই প্রথম উৎপন্ন তরঙ্গের তরঙ্গদৈর্ঘ্যকে মিলিমিটার পর্যায়ে নামিয়ে আনতে সক্ষম হন । তিনিই প্রথম রেডিও সংকেত সনাক্ত করার কাজে অর্ধপরিবাহী জংশনের ব্যবহার করেন । এই আবিষ্কার থেকে ব্যাবসায়িক সুবিধা নেয়ার পরিবর্তে তিনি তার আবিষ্কারকে সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেন, যেন অন্যরা এই গবেষণাকে আরো সমৃদ্ধ করার সুযোগ পান ।

By

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *